ইদের দিনে লাউদোহাতে চললো গুলি। ঝাঁঝরা কয়লা মাফিয়ার দেহ
মঙ্গলবারের সকাল। বছর পাঁচেক পরে নামাজ পড়া শেষ করে বাড়ি যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন আমিন। এত দিন খুনের অভিযোগে জেলে ছিলেন। ফলে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নামাজ পরতে আজ সকালে বাড়ি থেকে বের হন। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই ইদ্গাহ। সেখানে নামাজ পড়ে উঠে ইদ্গাহ থেকে বেরোনোর মুখেই গুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে কৈলাশপুর গ্রাম। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আমিন। সেখানেই তিনি মারা যান।
দুর্গাপুরের লাউদোহা থানার কৈলাশপুর গ্রাম। এমনিতেই কয়লার অবৈধ কারবারকে কেন্দ্র করে মাঝে মাঝেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ২০১১ সালে দুর্গাপুরের কয়লা মাফিয়া সেলিমকে খুনের অভিযোগে জেলে যান আমিন। মাত্র তিন মাস আগে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। ফলে এলাকা বাসীদের সাথে নামাজ পড়ার জন্য তৈরি হয়ে নেন আমিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ইদগাহ থেকে বেরোনোর মুখেই ছয় যুবক তার পথ আটকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। গুলি তার মাথা, চোখ ও কান ভেদ করে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগ দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই ইদগাহের আশেপাশে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে লুকিয়ে ছিল। আমিন সেখানে যেতেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় লাউদোহা থানার পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান পুরোনো শত্রুতার জেরেই তাকে খুন করা হয়েছে।পুলিশের কাছে শাহাজাহান, জানেউল, কাশীবুল, জাহাঙ্গীর শেখ, কাসেভ এবং বাবু নামে কয়লা মাফিয়ার নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মৃতের মেয়ে সামিনা বেগম বলেন ‘বাড়ি থেকে গুলির আওয়াজ শুনতে পেয়ে আমরা আতংকে ভুগতে থাকি।আমি আমার স্বামীকে বলতে থাকি বাবাকে ফোন করার জন্য। কিন্তু বাবাকে ফোন করার পরে দেখতে পাই যে বাবা ফোন তুলছে না। আমরা ভয় পেয়ে ছুটতে ছুটতে গিয়ে দেখি বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মাথা, কান , চোখ গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। ’
যদিও পুলিশ ঘটনার সাথে যুক্ত কাউকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।