বিয়ের সাত মাসের মধ্যেই উঠোনে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটছে গৃহবধূর !
স্রেফ সন্দেহের বশে বিয়ের সাত মাসের মধ্যেই এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো শ্বশুর বাড়ির লোকজনেদের বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে শ্বশুরবাড়ির উঠোনে আশ্রয় নিতে হয়েছে এক গৃহবধূকে।এই বৃষ্টির মধ্যে গাছের তলাই এখন তার সংসার। মাত্র সাত মাসেই এই বিপত্তি ঘটলো সুরঞ্জিতার জীবনে। বর্ধমান শহরের ৪ নং ইছলাবাদের এই ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ।এদিকে গত তিন দিন ধরে তাকে গাছের তলায় আশ্রয় নেওয়ার পাশাপাশি বাথরুম পায়খানাতে শ্বশুর বাড়ির লোক তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় সারাদিন ধরে খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি ।এদিকে সুবিচারের আশায় স্থানীয় কাউন্সিলার থেকে শুরু করে থানা, পুলিশ, প্রশাসন, লোক আদালতের সমস্ত দরজায় বিচারের আশায় ঘুরেও কোনো সুরাহা হয়নি তার।পুলিশ গিয়েও তার শ্বশুর বাড়ির দরজা খুলতে পারেনি। ফলে শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাড়ির উঁচু পাঁচিল টপকে তাকে রেখে যায়।
গৃহবধূ সুরঞ্জিতা সরকারের অভিযোগ মাত্র সাত মাস আগে গত জানুয়ারি ৪ নং ইছলাবাদে প্রাক্তন সরকারি কর্মী নিশীথ সরকারের ছেলে অভিজিতের সাথে তার দেখাশোনা করে বিয়ে হয়। তিনি জানান বিয়ের দিন আমি পার্লার থেকে আসতে দেরি হয়ে যাওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকেরা তাকে দোষারোপ করে বলেছিলেন আমি নাকি পালিয়ে গিয়েছিলাম। সেই সময় কোনোরকমে সুষ্ঠুভাবে বিয়ে মিটে গেলেও এরপর থেকে আমার সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করে। তখন ভেবেছিলাম আস্তে আস্তে সব সমস্যা হয়তো মিটে যাবে । কিন্তু দিনের পর দিন আমার সাথে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে ।এরপর গত ২৮ আগস্ট রাতে আমার গ্যাস অম্বল হওয়ায় শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি আমার স্বামীকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলি। কিন্তু আমার কথায় তারা কোনো পাত্তা না দেওয়ায় আমি বাধ্য হয়ে বাপের বাড়িতে খবর দিলে গভীর রাতে তারা আমায় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যায়। এরপরে সুস্থ হয়ে দুদিন বাদে আমার মা রত্না দাস আমাকে শ্বশুর বাড়িতে দিতে এলে তারা আর দরজা খোলেনি। তারা বলতে থাকে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছি তাই আর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এরপরেই আমি সুবিচারের আশায় রাজনৈতিক দল, পুলিশ প্রশাসন ও লোক আদালতের দ্বারস্থ হই। পুলিশ আমাকে পাঁচিল টপকে ঢুকিয়ে দিয়ে গেলেও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা দরজা না খোলায় উঠোনই আমার এখন একমাত্র আশ্রয় স্থল।
এদিকে তিন দিন ধরে গাছের নীচে আশ্রয় নিয়ে আছেন ওই গৃহবধূ। স্থানীয় নারী মোড়ের বাপের বাড়ি থেকে তার মা খাবার দিয়ে যান। সেই খাবার খেয়েই কোনোরকমে তিনি পড়ে আছেন গাছের তলায় । সুরঞ্জনার মা আকুতি জানিয়ে বলেন আমার মেয়েকে বাঁচান ।