শিশু পাচার কান্ডে গ্রেফতার চন্দনা চক্রবর্তী, ভয়ে কমছে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা
অভিরুপ দে, ময়নাগুড়ি:
শিশুপাচার কান্ডের প্রধান অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার হবার পর থেকেই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কমেছে আনন্দনগর প্রাথমিক বিদ্যলয়ে। এনজিও চালাবার পাশাপাশি চন্দনা চক্রবর্তী ময়নাগুড়ি অনন্দনগড় জুনিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পদে কর্মরত ছিলেন। গত শনিবার স্কুল থেকে ফেরার পথে স্কুল থেকে ১০০ মিটার দূরে সিআইডি আধিকারিকরা চন্দনা চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর মাঝে রবিবার ছিল ছুটির দিন। সোমবার থেকেই লক্ষ করা যাচ্ছে বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম। বিদ্যালয় সূত্রের খবর, বর্তমানে আনন্দনগড় জুনিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেনি মিলিয়ে পড়ুয়ার সংক্ষা ১০৪ জন। সাধারণ ভাবে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিতির সংখ্যা থাকে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন। কিন্তু, শিশু পাচার কান্ডে চন্দনা চক্রবর্তী গ্রেপ্তার হবার পর সেই সংখ্যা এক লাফে কমে এসে দাড়িয়েছে অর্ধেকে। কোনো কোনো দিন সেই সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে আরো কম। চন্দনা দেবী গ্রেপ্তার হবার পর প্রথম কর্ম দিবস ছিল সোম বার, সেদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিল ৪১ জন পড়ুয়া, তারপর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার উপস্থিত ছিল ৪৫ জন। বুধবারের উপস্থিতি ২৫ জন। বৃহস্পতিবার ২৪ জন। এলাকাবাসীদের থেকে জানা গিয়েছে, গত শনিবার স্কুল ছুটির পর বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষিকাকে নিয়ে ফিরছিলেন চন্দনা চক্রবর্তী। সেইসময় স্কুল থেকে ঢিলছোড়া দুরত্বে সিআইডির আধিকারিকরা চারদিক থেকে চন্দনাকে ঘিরে ধরে গ্রেপ্তার কোরে নিয়ে যায়। গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বিদ্যালয়ের দুই কর্মিকে। সেই থেকেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। অভিভাবকরাও যথেষ্ট অতঙ্কিত বিষয়টি নিয়ে। অনেকেরি আশঙ্কা ফের সিআইডি কিংবা পুলিশ হানা দিতে পাড়ে বিদ্যালয়ে। সেই আশঙ্কা থেকেই অনেক অবিভাবকই তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। যদিও প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই। বিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় কাঠাম ও শিক্ষিকা কৃষ্ণা ভট্টাচার্যও স্বীকার করে নিয়েছেন সামগ্রিক পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের কম উপস্তিতির বিষয়টি। স্থানিয় বাসিন্দা রীতা মুখার্জি, রাজিব গড়াই বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চন্দনা চক্রবর্তী নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতেন না ঠিকই কিন্তু, বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা নিয়মিত ভাবেই বিদ্যালয়ে আসেন। এমনকি বিদ্যালয়ের পড়াশুনার মানও যথেষ্ট ভালো। গত চারদিনে পড়ুয়াদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শিক্ষকরা কয়েকজন অবিভাবকদের সাথেও কথা বলেছেন তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য। বিদ্যালয়ের তরফ থেকেও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা চলছে। চেষ্টা চলছে অবিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের।